গরুর মাংস
- Sadia
- Oct 29, 2020
- 2 min read
বেশ কয়েকটা ব্লগে আমি প্রায় বলেছি যে গরুর মাংস আমার প্রিয় খাবারের মধ্যে পরে না, আমি বেশিরভাগ সময় সবজি খেতে পছন্দ করি। তাও অ্যানিমিয়াতে ভোগার কারনে, আমাকে নিয়মিত আয়রন যুক্ত খাবার খেতে হয়। সত্যি বলতে আমি আমার আম্মুর বানানো গরুর মাংস ছাড়া অন্য কারোরটা খেতাম না, কিন্তু জাপান যাওয়ার পর কোন উপায় না পেয়ে নিজে গরুর মাংস বানানোর উদ্যোগ নিলাম সেই ২ বছর আগে। আজ পর্যন্ত আম্মুর হাতের গরুর মাংসের পুনরাবৃত্তি করতে পারিনি। আম্মু কে জিজ্ঞেস করলেই বলে, "সব একসাথে মিশিয়ে বসিয়ে দাও, সুন্দর হয়ে যাবে।" বলবোনা আমি চেষ্টা করি নাই, কিন্তু কেন জানি কাজ করে নাই। ভাবলাম আম্মু অনেক পাকা রাঁধুনি তো, যেটাই করে সেটাই ভাল হয়। তাই আমি বাকি তরকারির মত, আগে মসলা কসিয়ে তারপর মাংস দিয়ে চুলায় বসিয়ে চেষ্টা করলাম, তাও কাজ করে না। কি আর করা, যেভাবেই হয় সেভাবেই খেতে থাকলাম। কয়েকদিন আগে কি মনে করে, আমি আম্মুর পদ্ধতিতে আবার চেষ্টা করে দেখলাম। তো আম্মুর সহজ পদ্ধতিটার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল, তা একটু দেখে নেই।

প্রথমেই, একটা হাড়িতে গরুর মাংস নিয়ে তার মধ্যে দিয়ে দিলামঃ অলিভ অয়েল, পাঁচ ফোড়ন, গরম মশলা, আস্ত জিরা, তেজ পাতা, আদা বাটা, আস্ত রসুন, হলুদের গুড়ো, লাল মরিচের গুড়ো, ধনের গুড়ো, জিরার গুড়ো এবং লবণ। সব একসাথে ভাল করে মিশিয়ে ঢেকে দিয়ে বসিয়ে দিলাম চুলায় অল্প আঁচে। আম্মু খুবই গুরুত্ব দিয়ে বলত যে গরুর মাংসে কখনই পানি দিতে হয় না, মাংস থেকেই পানি বের হবে। সেই পানি শুকিয়ে আসলে তবে তখনই পানি দিতে। তো আমি তাই করলাম, কোন পানি দিলাম না। ঠিক ৪০ মিনিট পর পানি শুকিয়ে আসলো, আমি দুই কাপ মত পানি দিয়ে আবার ঢেকে দিলাম। আমার যেহেতু প্রেশার কুকার নেই, আমার মাংস রান্না হতে প্রায় দেড়-দুই ঘন্টা লেগেছে। পুরোটা সময় আমি অল্প আঁচেই রান্না করেছি।
রান্না হতেই চেখে দেখি, ওমা! পুরা আম্মুরটার মতো! হালকা পার্থক্য তো থাকবেই কিন্তু for now let's ignore that। অবশেষে আম্মুর গরুর মাংস বানাতে পেরে আমি যে কি খুশি তা বলে বুঝাতে পারবনা। সত্যি বলতে, আমার মতে এর চেয়ে বড় অর্জন আর হয় না আসলে। আমার আম্মু খুবই ভাল রান্না করে, আমি বিশ্বাস করি সুযোগ পেলে আম্মু খুব বড়সড় শেফ হতে পারত। আমার ব্লগ নিয়মিত পড়ে থাকলে, you'll know how much I idolize her।
আমার প্রথম বাংলা ব্লগ পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Soon!
খেতে পারবো কবে? 🙄